বৃহদান্ত্রের কাজ

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র | NCTB BOOK

বৃহদন্ত্রের কাজঃ খাদ্যের পরিপাক এবং পরিপাককৃত খাদ্য দেহে শোষণের পর যে অংশটুকু অপাচ্য থাকে বা শোষিত হয় না, তা বৃহদন্ত্রে প্রবেশ করে। মানুষের পৌষ্টিকতন্ত্রের ক্ষুদ্রান্ত্রের ইলিয়ামের পেছন থেকে পায়ু পর্যন্ত বিস্তৃত মোটা, নলাকার ও খাঁজযুক্ত অংশকে বৃহদন্ত্র বলে । এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১.৫ মিটার। এটি তিন অংশে বিভক্ত। সম্মুখের জেজুনাম সংলগ্ন গোলাকৃতির অংশকে সিকাম (caccum), মধ্যবর্তী আকৃতির বৃহৎ অংশকে কোলন (colon) এবং পশ্চাতের পায় সংলগ্ন থলে আকৃতির অংশকে মলাশয় (rectum), বলে। সিকামের সাথে একটি বদ্ধ ধরনের থলি যুক্ত থাকে। একে অ্যাপেনডিক্স (appendix) বলে) মানুষের বৃহদন্ত্র প্রধানত নিম্নবর্ণিত কাজগুলো সম্পন্ন করে।

১. মলাশয় ও সিকামে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া
প্রায় ৫০০ প্রজাতির) মিথোজীবী হিসেবে বাস করে।এসব ব্যাকটেরিয়া উদ্ভিদতত্ত্বর সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ (যেগুলো পরিপাক করার মতো এনজাইম মানুষের
পৌষ্টিকনালি থেকে নিঃসৃত হয়না) প্রভৃতির ফারমেন্টেশন ও হাইড্রোলাইসিস ঘটিয়ে ক্ষুদ্র খাদ্যাণুতে পরিণত করে।

২. ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে আগত পরিপাক বর্জ্যে বিদ্যমান পানির প্রায় ৭০-৮০% অভিস্রবণের মাধ্যমে বৃহদন্তে শোষিত হয়ে কঠিন মলের আকার ধারণ করে। কিছু পরিমাণ অজৈব লবণ, গ্লুকোজ, অ্যামিনো এসিড, ফোলিক এসিড,ভিটামিন -B ও K বৃহদন্ত্রে শোষিত হয়।

৩.বৃহদন্ত্রের মিউকোসা স্তরে অবস্থিত গবলেট কোষ থেকে মিউকাস ক্ষরণ করে বৃহদন্ত্রের  অভ্যন্তর ভাগকে পিচ্ছিল রাখে।


৪. ক্ষুদ্রান্ত্রের পরিপাক ও শোষণের পর খাদ্য ও পাচকরসগুলোর অবশিষ্ট উপাদান ইলিওকোলিক পেশিবলয় অতিক্রম করে সিকাম ও কোলনে প্রবেশ করে এবং সেখানে দীর্ঘসময় সঞ্চিত থাকে।

৫. দৈনিক প্রায় ৩৫০ গ্রাম তরল মন্ড (chyle) বৃহদন্ত্রে প্রবেশ করে। মন্ড থেকে শোষণের মাধ্যমে প্রায় ১৩৫ এর আর্দ্র মল (facces) উৎপন্ন হয়ে দেহের বাইরে নিষ্ক্রান্ত হয়। মলাশয় থেকে মল পায়ুছিদ্র পথে বের করে দেওয়াকে মলত্যাগ বলে। মলত্যাগ একটি প্রতিবর্ত (reflex) ক্রিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে মলত্যাগের প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পূনর্বয়স্ক মানুষ দিনে একবার কিংবা দুবার, শিশুরা দিনে কয়েকবার মলত্যাগ করে।

Content added By
Promotion